১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে সারা বাংলা যখন ইংরেজ অত্যাচারে শশ্বানে পরিণিত,ব্যাপক বিশৃঙ্খলা অরাজগতায় ভরে গেছে,বাংলা মসনদে বসে পুতুল নবাব সমস্ত ক্ষমতা ইংরেজ সাহেবদের হাতে ঠিক সেই সময় শুরু হয় ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। আর এমন একটা সময়ে বাংলার মানুষকে ইংরেজদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ফকির সন্নাসীরা আধ্যাত্মিক সাধনা ছেড়ে এদেশে চলে আসে। তাদের প্রধান আখাড়াছিল নেপালের গোরখপুর জেলার মাখনপুরে। তারা এদেশে এসে বগুড়ার মহাস্থনগড় এবং ময়মনসিংহ জেলার দাওকোবা নদীর দুর্গম চরে আখড়া স্থাপন করে। দাওকোব নদী ছিল ব্রক্ষপুত্রের একটি শাখা। যা বর্তমানে যমুনা নদী হিসেবে পরিচিত। তখন আজকের প্রবাহমান যমুনা নদীর কোন অস্তিত্ব ছিল না।১৭৭৮ সালে ইংরেজ জরিপকারী মি. রেনেল যে মানচিত্র তৈরী করে তাদের যমুনার কোন নাম ছিল না,যে মানচিত্রে ব্রক্ষপুত্রের ও দাওকোবা নদীর নাম পাওয়া যায়। ফকির সন্ন্যাসীগণ এই দর্গম চরে তাদের গোপন কার্যক্রম শুরু করেন। সেই সময় তাদের দলে এসে যোগদেন শাহ্ মাদার নামে একজন ধর্ম প্রচারক। তিনি সিরিয়া থেকে ধর্ম প্রচার করার জন্য এদেশে আগমন করেন। তাঁর পুরু নাম চিল সেয়দ বদিউদ্দিন কুতুব-উর মাদার। শাহ। মাদার ফকির বিদ্রোহের নেতা মজনু শাহ্ এর সাথে সরাসরি ফকির আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন।১৭৬৩ সালের দিকে শাহ্ মাদার দুর্গম এই চরে আগমন করার পর ফকিরগণ ত৭ার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে এবং তারা মাদারিয়া সম্প্রদায় ভূক্ত হয়ে যান। ১৭৭২ সালে বর্ষায় ফকির-সন্ন্যাসী বগুড়া ও ময়মনসিংহ জেলার বিবিন্ন গ্রামে ব্যাপক লুটতরাজ ও দাঙ্গা সৃষ্টি করে। তারা কৃষকদের সর্বস্ব লুটে নেয়। এতে দেশে শুরু হয় ভয়াবহ অবস্থা। সন্ন্যাসী বিদ্রোহ কিছুটা দমন হলে ১৮১৫ সালে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট মি. ইয়ার মাদারগঞ্জ এলাকায় আইন শৃঙ্খলা ও সরকারী ফরমান জারী করার জন্য ১৩ জন চৌকিদার নিয়োগ করেন।১৮৪৫ সালে জামালপুর মহকুমা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ১৮৮২ সালে মাদারগঞ্জ একটি পুলিশ ফাডিঁ স্থাপন করা হয়। ফাঁডি স্থাপনের ২৪ বছর পর ১৯০৬ সালের ১৫ জুন পূর্ববঙ্গ আসাম গেজেটে মাদারগঞ্জ পুলিশ ফাঁডিকে পূর্নাঙ্গ থানায় রুপান্তর করা হয়। মাদারগঞ্জ সেই থেকে একটি থানার নাম। বর্তমানে ইহা একটি উপজেলার নাম।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস